হাত দিয়ে খেলাধুলার
মধ্যে তাস
খেলা কেবল
আমাদের দেশেই
নয়, বিশ্বের
বেশির ভাগ
দেশেই জনপ্রিয়। ইস্কাপন,
হরতন, রুইতন,
চিরতন নামগুলো
কম- বেশি
সবার কাছেই
পরিচিত।
কিন্তু তাসের
ইতিহাস অনেকেরই
অজানা।
অনেকেই জানেন
না ডায়মন্ডস,
স্পেডস, হার্টস
এবং ক্লাবস
এর প্রতীকগুলো
কোথা থেকে
এসেছে, এর
পেছনের রহস্যই
বা কি
কিংবা প্রতীকগুলোর
অর্থ কি?
তাস
খেলার আবিষ্কার হয়েছে
আজ থেকে প্রায়
ছয়শত বছরেরও বেশি
সময় আগে পঞ্চদশ
শতকে । বিশ্বে
প্রথম তাস খেলার
প্রচলন ঘটে চীনে। খ্রিস্টীয় নবম
শতকের দিকে টাং
রাজার রাজত্বকালে অন্তঃপুরবাসী রানীরা
তাস খেলে সময়
কাটাতেন। তখন
খেলার কার্ড হিসেবে
পয়সা ও প্লেট
ব্যবহার করা হতো। এ
খেলা দ্রুত ভারতবর্ষেও তখন
ছড়িয়ে পড়ে এবং
খেলার কার্ড হিসেবে
তখন রিং, তলোয়ার,
কাপ ইত্যাদি ব্যবহার করে। তবে
৫২ কার্ডের খেলা
প্রচলন করে প্রাচীন মিসর। তারা
এই কার্ড চারজন
মিলে খেলত। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে
চারজন মিলে যেভাবে
তাস খেলা হয়,
সেটা মিসর উদ্ভাবন করেছিল
খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে। ঊনবিংশ
শতাব্দীর আগ পর্যন্ত এই
খেলা রাজপরিবার এবং
সৈন্য-সামন্তের মধ্যেই
সীমাবদ্ধ ছিল। তবে জার্মানির রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে
সঙ্গে কার্ডের নামেও
আসে পরিবর্তন। ক্ষমতানুযায়ী কার্ডের নাম
দেওয়া হয় রাজা-রানী, জোকার
ইত্যাদি নাম। বর্তমানে এই
খেলা এত বেশি
জনপ্রিয় যে, তা
মোবাইল ও কম্পিউটারের ভেতরেও
ঢুকে গেছে!
তাসের
চারটি প্রতীক পঞ্চদশ
শতকের সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর পরিচয়
বহন করে ।
আবার তাসের ছবিগুলোতে উপস্থাপিত হয়েছে
ঐতিহাসিক নানা ব্যক্তিত্বের। প্রথম
দিকে তাসের প্যাকেটে ৭৮টি
তাস থাকত। কিন্তু
এতগুলো তাস নিয়ে
খেলা জটিল ও
কষ্টকর হয়ে ওঠায়
তাসের সংখ্যা কমিয়ে
আনা হয়। তবে
হ্রাসকৃত সংখ্যার মধ্যে
যে তাসটি এখনো
সগৌরবে টিকে আছে
সেটি হলো জোকার।
খেলুড়েদের কাছে এই
তাসটি সুপার ট্রাম্প কার্ড
হিসেবে পরিচিত।
প্রধান
চারটি তাস যেই
প্রতীক বহন করে :
- ডায়মন্ডস হলো ধনী শ্রেণীর প্রতীক। তখনকার সময়ে এরা ছিলো শাসক শ্রেণী। ডায়মন্ডস দিয়ে তাদের ধনদৌলত-ঐশ্বর্য কে বোঝানো হতো।
- স্পেডসের হলো সৈন্যের প্রতীক । ‘স্পেড’ শব্দটি এসেছে স্প্যানিশ ‘স্পাডা’ থেকে। যার অর্থ তরবারি।
- হার্টস পাদ্রিদের প্রতীক। আগে প্রতীকটির আকার ছিল পান পাতার মতো। পরে ওটা হার্ট বা হৃৎপিণ্ডের আকার পায়।
- ক্লাবস বলতে বোঝানো হতো গরিব মানুষদের। ইংরেজি ক্লাবের বাংলা হলো মুগুর। গরিব শ্রেণীর মানুষের মুগুরই সম্বল এরকম একটা অর্থ বহন করে এই তাসটি।
তাসের
গায়ের ছবিগুলোরও রয়েছে
ঐতিহাসিক ব্যাখ্যাঃ
কিং অব ডায়মন্ডস হলেন জুলিয়াস সিজার এবং কুইন অব ডায়মন্ডস হলেন তার স্ত্রী র্যাচেল।
কিং অব স্পেডস হলো ডেভিড, গোলিয়াথের হত্যাকারী। এই তাসের রানী হলেন গ্রিক যুদ্ধ দেবী প্যালাস, যিনি দুই হাতে ধরে আছেন তরবারি ও ফুল।
কিং অব হার্টস-এর ছবি আঁকা হয়েছে বিখ্যাত রাজা শার্লেমেন-এর অনুকরণে যিনি ৮০০ খ্রিস্টাব্দে জয় করেন অর্ধেক ইউরোপ। তার তাসের রানী হলেন বাইবেল উলি্লখিত নায়িকা জুডিথ। যিনি রাজার তরবারির এক আঘাতে এক আসিরিয়ান সেনাপতিকে হত্যা করেছিলেন।
কিং অব ক্লাবস হলেন দিগ্বিজয়ী আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট, যিনি ৩২৩ খ্রিস্টপূর্বে পৃথিবীর প্রায় পুরোটা দখল করে নিয়েছিলেন। আগের তাসে পৃথিবীর মানচিত্রের গোলক থাকত, পরে তার আলখেল্লায় গোলকটি আঁকা হয়। কুইন অব ক্লাবস হলেন একমাত্র ইংরেজ মহিলা। যিনি আর কেউ নন রানী প্রথম এলিজাবেথ। তার গোলাম হলেন রাউন্ড টেবিলের বিখ্যাত নাইট, স্যার ল্যান্স লট।
সূত্র : ইন্টারনেট
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন