ভূমি রেকর্ড ও জরিপঃ


বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (1885) অধীনে ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে বোড অব রেভিনউ এর নিয়ন্ত্রণাধীনে ভূমি রেকড ও কৃষিনামে দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। পরবর্তীতে 1888 সালে ভূমি রেকড দপ্তরনামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে পৃথক দপ্তরের ওপর ন্যস্ত ছিল। 1919 সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকড দপ্তরের ওপর ন্যস্ত হওয়ায় ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হিসেবে গড়ে উঠে। 1947 সালের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলার বাউন কম্পাউন্ডেজরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। 1953 সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বতমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। 1948 সালে দেশ বিভাগের পর সেটেলমেন্ট প্রেস অবিভক্ত ভারতের হুগলী হতে স্থানান্তরিত হয়ে 1948 সালে প্রথম রংপুর স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে 1960 সালে এটি ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ভূমি জরিপ ও ভূমির মালিক/দখলদার সম্পর্কিত কাগজপত্র প্রণয়ন ভূমি ব্যবস্থাপনার একটি অপরিহার্য অঙ্গ।

ভূমি রেকর্ড জরিপ অধিদপ্তরে কার্যপরিধি:

একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সমগ্র দেশ, কোন জেলা অথবা জেলার কোন অংশের স্বত্বলিপি এবং মৌজা ম্যাপ প্রস্তুত/সংশোধন করবার লক্ষ্যে ভূমি রেকড ও জরিপ পরিচালনার জন্য প্রকল্প প্রণয়ন এবং তার বাস্তবায়ন।

) পর্যায়ক্রমে সমগ্র দেশের প্রতিটি মৌজার প্রতিটি ভূ-খন্ডের জরিপ করে ভূমি রেকড ও মৌজার ম্যাপ প্রস্তুত/সংশোধন করা।

দেশের প্রতিটি ভূমি মালিকের রেকড-অব-রাইটস বা স্বত্বলিপি (খতিয়ান) প্রণয়ন এবং মুদ্রনের কাজ।

দেশের প্রতিটি মৌজার, থানার, জেলার এবং সমগ্র দেশের ম্যাপ প্রস্তুত, মুদ্রণ এবং পুনমুদ্রণ করা।

মৌজা ম্যাপ প্রস্তুত করার জন্য থিওডোলাইট ট্রাভাস সার্ভের মাধ্যমে কন্টোল পয়েন্ট নির্ধারণ করা।
দেশের আন্তর্জাতিক সীমানা চিহ্নিত করা, সীমানা স্ট্রীপ ম্যাপ প্রস্তুত করা এবং তা মুদ্রণ করা।

আন্তঃজেলা এবং আন্তঃথানা সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসককের কাডরগরী সহায়তা প্রদান করা।

জেলা/থানা পুনগর্ঠন সংক্রান্ত সরকারী প্রস্তাবে কারিগরী ও ভৌগলিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয় নিরীক্ষা করা।

আন্তর্জাতিক ও আন্তঃজেলা সীমানা চিহ্নিতকরন। ক্যাডাস্টাল সার্ভে এবং ভূমি সংস্কার কাযক্রম সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারকে পরামশ প্রদান করা।

প্রতি বছর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন/পুলিশ/বন) ক্যাডারসহ বিচারবিভাগীয় অফিসারগণের সার্ভে ও সেটেলমেন্ট ট্রেনিং এর আয়োজন করা এবং ট্রেনিং প্রদান করা।


চলমান কাযক্রমঃ
§  এদেশে সর্ব প্রথম জরিপের কাজ শুরু হয় 1887 সালে Cadastral Survey (CS) এবং শেষ হয় 1940 সালে। এ জরিপই এখনো দেশের Record of Rights (ROR)

§  জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের প্রেক্ষাপটে 1955 সালে State Acquisition Operation (SA) এর আওতায় রেকড প্রণয়নের কাজ শুরু হয় এবং 1962 সালে একাজ শেষ হয়। প্রকৃত প্রস্তাবে SA রেকড প্রস্ততকালে কোন সরজমিন জরিপ কাজ পরিচালিত হয়নি। জমিদারের আওতাধীন প্রজা/মালিকদের নামে মালিকানার স্বত্ব এবং খাস জমির তালিকা প্রস্তুত করাই ছিল এ জরিপের উদ্দেশ্য।

§  RS রেকডঃ CS জরিপ সমাপ্ত হতে দীর্ঘ 50 বছর সময় লাগে। এ সময়ের মধ্যে জমির প্রকৃতি ও মালিকানা পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে 1940 সনে বৃহত্তর ফরিদপুর ও বরিশাল জেলায় RS বা সংশোধনী জরিপ শুরু করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে বৃহত্তর ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া ও পাবনা জেলায় RS জরিপ সম্পন্ন করা হয়। ময়মনসিংহ জেলার RS কাযক্রম বতমানে সমাপ্তি।

§  1984 সালে Land Reforms Ordinance এর আওতায় দেশের সবকটি জেলায় জরিপ এর স্থায়ী কাঠামো স্থাপন এবং চলমান প্রক্রিয়ায় রেকর্ড হালকরণ (Continuous Updating) এর লক্ষ্যে NICAR এর সিদ্ধান্ত মতে প্রাথমিকভাবে 10টি (বগুড়া, রংপুর, বরিশাল, সিলেট, যশোর, খুলনা, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, নোয়াখালী ও কুমিল্লা) জেলার অফিসের মাধ্যমে জরিপ কাজ হাতে নেয়া হয়। পাশাপাশি একটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা শহর জরিপের কাজ হাতে নেয়া হয় যা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

§  বতমানে দেশের 10টি বৃহত্তর জেলার (সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, খুলনা রংপুর, বগুড়া এবং টাঙ্গাইল) জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের আওতাধীনে জরিপ কাজ চলছে।


হিসাব-নিকাসঃ
ভূমি জরিপ বা ল্যান্ড সার্ভে একটি টেকনিক্যাল কার্যক্রম। এর সাহায্য একটি এলাকার সকল বা নির্দিষ্ট ভূমিখন্ডের একটি নিদিষ্ট স্কেলে নিদিষ্ট মানের কাগজে পরিমাপ গ্রহণক্রমে এর অবস্থান, আয়তন সীমানা (পেরিফেরি) নির্ণয় করা হয়। এরূপ কার্যক্রম দ্বারা একটি মৌজা নকশা অংকিত হয় এবং নকশার ভূমি খন্ডের দখল মালিকানার বর্ণনা নিয়ে একটি খতিয়ান প্রণীত হয়। দুটো মিলে রেকর্ড অব রাইট বা স্বত্বলিপি প্রস্তুত হয়
জরিপে প্রণীত এরূপ স্বত্বলিপি অত্যন্ত মূল্যবান দলিলরূপে পরিগণিত। একটি দেশের প্রশাসনিক সীমানা অভ্যন্তরীন বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্র নির্ধারণের জন্য গ্রাম বা মৌজার সীমানা সুনিদিষ্ট থাকা আবশ্যক। সুনিদিষ্ট স্কেলে বাস্তব ভূমি খন্ডের চিত্রায়িত নকশা মামলা মোকদ্দমায় সাক্ষ্য যাচাঁই এবং Place of occurrence অর্থাৎ ঘটনাস্থল নির্ধারণ করতেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ভূমি জরিপের আবশ্যকতার সাথে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে যে, সুষ্ঠুভাবে ভূমি জরিপ সম্পন্ন করা না গেলে সরকারের জমি যেমন বেহাত হতে পারে তেমনি ব্যক্তিগত জমির ক্ষেত্রে দাংগা হাংগামা, খুন ইত্যাদি কারণে মামলা মোকদ্দমা বেড়ে গিয়ে সামাজিক বিশৃংখলা সৃষ্টি হতে পারে

ভূমি জরিপের ইতিহাসঃ
পাঠান সম্রাট শেরশাহ সর্ব প্রথম উপমহাদেশে জরিপ প্রথা চালু করেন। পরবর্তীতে মোঘল সম্রাট আকবরের একজন অন্যতম সভাসদ টোডরমল সার্ভে সেটেলমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনা করেন। কিন্তু উক্ত কার্যক্রম সম্পূর্ণ এবং plot-to-plot সার্ভে কার্যক্রম ছিলনা বরং একটি সংক্ষিপ্ত কার্যক্রম ছিল

ক্যাডাস্ট্র্যাল সার্ভে (সি.এস.জরিপ)
১৮৮৫ সালের বংগীয় প্রজাস্বত্ব আইনের ১০ম পরিচ্ছেদের বিধান অনুসারে ১৮৮৯ সাল হতে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত সিলেট পার্বত্য জেলা ব্যতীত সাআ দেশে সি.এস.জরিপ সম্পন্ন করা হয়। কর্মসূচীতে কক্সবাজারের রামু থানা হতে আরম্ভ করে ১৯৪০ সালে দিনাজপুর জেলায় সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট অপারেশন শেষ করার মাধ্যমে সি.এস.জরিপের পরিসমাপ্তি ঘটে। সময়ে সিলেট জেলা আসাম প্রদেশের অর্ন্তভূক্ত থাকায় বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের আওতাভূক্ত ছিলনা বিধায় সিলেট জেলায় সি.এস.জরিপ হয়নি। তবে জরিপ কার্যক্রম জরুরী বিবেচনায় ১৯৩৬ সালের সিলেট প্রজাস্বত্ব আইনের (Sylhet tenancy Act) আওতায় জেলার ক্যাডাষ্ট্রাল সার্ভে ১৯৫০ সালে আরম্ভ করা হয় এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর অধীনে জরিপ ১৯৬৩ সালে শেষ হয়। উক্ত জরিপে নকশা রেকর্ড উভয়ই প্রস্তুত করা হয়। সি.এস.জরিপের মাধ্যমে প্রতিটি মৌজার জন্য নকশা (ম্যাপ) প্রস্তুত করে প্রতিটি ভূমি খন্ডের বাস্তব অবস্থা, আয়তন, শ্রেণী, জমির পরিমাণ, খাজনার পরিমাণ ইত্যাদি উল্লেখ করে খতিয়ান প্রণয়ন করা হয়। সি. এস.খতিয়ান নকশা খুবই নিখুঁত নির্ভরযোগ্য ছিল। সি.এস. জরিপে জমিদারগণের নাম খতিয়ানের উপরিভাগে লেখা থাকত এবং দখলকার রায়তের নাম নিচে লেখা থাকত। তখন জমির মালিক ছিলেন সরকার পক্ষে জমিদারগণ এবং রায়তগণ প্রজা হিসেবে শুধুমাত্র ভোগ দখলকার ছিলেন

 নামজারীঃ
ভূমি ব্যবস্থাপনায় মিউটেশন বা নামজারী একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। জমি ক্রয় বা অন্য কোন উপায়ে জমির মালিক হয়ে থাকলে হাল নাগাদ রেকর্ড সংশোধন করার ক্ষেত্রে মিউটেশন একটি অপরিহার্য নাম। ইংরেজী মিউটেশন (Mutation) শব্দের বাংলা অর্থ হলো পরিবর্তন। আইনের ভাষায় এই মিউটেশন শব্দটির অর্থই হলো নামজারী। নামজারী বা নাম খারিজ বলতে নতুন মালিকের নামে জমি রেকর্ড করা বুঝায়। অর্থাত্‍‍ পুরনো মালিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন মালিকের নামে জমি রেকর্ড করাকে নামজারী/নাম খারিজ বলে। ভূমি মালিকানার রেকর্ড বা খতিয়ান বা স্বত্বলিপি হালকরণের জন্য জরিপ কার্যক্রম চূড়ান্ত করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। যে সময়ের মধ্যে উত্তরাধিকার সূত্রে, এওয়াজ সূত্রে বিক্রয়, দান, খাস জমি বন্দোবস্ত ইত্যাদি ভূমি মালিকানার পরিবর্তন প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকে। যে কারণে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল ভূমি মালিকানার রেকর্ড হালকরণের সুবিধার্থে জমিদারী অধিগ্রহণ প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ১৪৩ ধারায়  কালেক্টরকে (জেলা প্রশাসক) ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষমতা বলে জমা, খারিজ নামজারী এবং জমা একত্রিকরণের মাধ্যমে রেকর্ড হাল নাগাদ সংরক্ষণ করা হয়
 কমিশনার (ভূমি) ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়েল ১ঌঌ০ এর ২০ অনুচ্ছেদ বলে নামজারী বা মিউটেশনের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। পূর্বে নামজারীর বা মিউটেশনের দায়িত্ব উপজেলা রাজস্ব বা অফিসার বা সার্কেল অফিসার (রাজস্ব) পালন করতেন

 খাস জমি :
কোনো জমি যদি সরকারের হাতে ন্যস্ত হয় এবং সেই জমিগুলি যদি সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং সরকার,এই জমিগুলি সরকার কর্তৃক প্রণীত পদ্ধতি অনুযায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন অথবা অন্য কোনো ভাবে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে উক্ত ভূমিগুলিকে খাস জমি বলে। ১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনান্সি এক্টের ৭৬ ধারার   উপধারায় খাস জমি সম্বন্ধে বলা হয়েছে। উক্ত ধারায় বলা হয়েছে যে,কোনো ভূমি যদি সরকারের হাতে ন্যস্ত হয় এবং সেই জমিগুলি যদি সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে তাহলে সরকার,এই ভূমিগুলি সরকার কর্তৃক প্রণীত পদ্ধতি অনুযায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন,অথবা অন্য কোনো ভাবে ব্যবহার করতে পারেন, সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন উপরোক্ত ভূমিগুলিকে খাস জমি হিসাবে বুঝাবে
তবে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের যথা বন বা পূর্ত কিংবা সড়ক জনপথ এর স্বত্বাধীন বা মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন ভূমিকে সরকারের খাস জমি হিসাবে গন্য করা যাবে না
(১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনান্সি এক্টের ৭৬ ধারা এবং ৮৭ ধারা)
(গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এর সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদ)

মৌজা:  ভূমি জরিপের ভৌগলিক ইউনিটকে মৌজা রাজস্ব নির্ধারণ এবং রাজস্ব আদায়ের জন্য এক ইউনিট জমির ভৌগোলিক আভিব্যক্তি হলো মৌজা। একটি মৌজা আনুমানিক ভাবে একটি গ্রামের সমান বা এর চেয়ে কিছুটা ছোট-বড় হয়।ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভের(CS) সময়ে এক একটি মৌজা এলাকাকে পৃথকভাবে পরিচিতি নম্বর নম্বর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।বাংলাদেশে মোট মৌজার সংখ্যা হচ্ছে ৬৯,৯৯০ টি।

দাগ নম্বর:  একটি মৌজার বিভিন্ন মালিকের বা একই মালিকের বিভিন্ন শ্রেণিভূক্ত জমিকে নকশায় যে পৃথক পরিচিতি নম্বর দ্বারা চিহ্নিত করা হয় তাকে দাগ বলে। মৌজা মাপের উত্তর-পশ্চিম কোন থেকে দাগ নম্বর প্রদান শুরু হয় এব দক্ষিন-পূর্ব কোনে এসে শেষ হয়।

দাখিলা:   ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের পর তহসিল অফিস হতে ভূমি মালিককে যে রশিদ দেয়া হয় তাকে দাখিলা বলে।

পর্চা:  জরিপের খানাপুরি স্তর পযন্ত কাজ শেষ করে খসড়া খতিয়ান প্রস্তুত করে এর অনুলিপি মালিকের নিকট বিলি করা হয়। খতিয়ানের এই অনুরিপিপর্চানামে পরিচিত।

খতিয়ান:  একটি মৌজায় এক বা একাধিক ভূমি মালিকানার বিবরণ তথা ভূমির পরিমান, শ্রেণি,হিস্যা ইত্যাদি যে পৃথক পরিচিতি নম্বর দিয়ে চিহ্নিত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে।

হাল খতিয়ান:  কোন এলাকার সর্বশেষ জরিপে খতিয়ানের রেকর্ড প্রস্তুত হওয়ার পর সরকার দ্বারা বিঙ্গপ্তির মাধ্যমে ঘোষিত হয়ে বর্তমানে চালু আছে এমন খতিয়ানকে হাল খতিয়ান বলে।

সাবেক খতিয়ান:  হাল খতিয়ানের পূর্ব পযন্ত চালু খতিয়ানকে সাবেক খতিয়ান বলে,যা বর্তমানে চালু নেই।তবে এর গুরুত্ব অনেক বিধায় এর সংরক্ষন দরকার।

সিএস খতিয়ান:  সিএস খতিয়ানের পূর্ণরুপ Cadastral Survey (দেশব্যাপি জরিপ) খতিয়ান।১৯১০-১৯২০ সালে জরিপ করে এই খতিয়ান তৈরী করা হয়েছিল।

এসএ খতিয়ান:  এসএ খতিয়ান এর পূর্নরুপ State Acquisition (রাষ্ট্রকতৃক অর্জন) খতিয়ান। টেস্ট একুইজিশন এন্ড টেনেন্সি আইন প্রণয়ন করে ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত করা হয়। জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের পর যে খতিয়ান তৈরী করা হয় তাকে বলে এসএ খতিয়ান। ১৯৫৬ সালের জরিপে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়।

আরএস খতিয়ান:  আরএস-এর অর্থ হলো Revisional Settlement বা সংশোধণী জরিপ।এসএ খতিয়ানের পর আইনের ১৪৪ ধারা অনুসারে যে খতিয়ান প্রকাশিত হয় (বা হবে) তাকে আর এস খাতয়য়ান বলে।

হোল্ডিং নম্বার:  খতিয়ান শব্দের অর্থ যা হোল্ডিং শব্দের অর্থ তাই। ১৯৫০ সালে State Acquisition(SA) আইন অনুসারেহোল্ডিংশব্দটি ব্যবহার করা হয়।

ভূমি অধিগ্রহন:  কোন স্থবর সম্পত্তি সরকারী প্রয়োজনে বা জনস্বার্থে আবশ্যক হলে উক্ত সম্পত্তি জেলা প্রসাসক কতৃক বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহনের বিধান ভূমি অধিগ্রহন নামে পরিচিত।

অর্পিত সম্পত্তি:  ১৯৫৬ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় যেসব পাকিস্থনি নাগরিক দেশ ছেড়ে ভারকে গমন করে পাকিস্থান প্রতিরক্ষা সার্ভিস কতৃক বিধি মোতাবেক তাদের শত্রু বলে ঘোসণা করা হয় এবং তাদের এদেশে রেখে যাওযা সম্পত্তিকে শত্রু সম্পত্তি বলে। ১৯৭৪ সালে উক্ত সম্পুত্তিকে অর্পিত সম্পত্তি নামকরণ করা হয়।
                                                       


                                                                                      (সংগৃহীত)