পিরামিড পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি। প্রাচীন মিশর শাসন করতেন ফারাও রাজারা। তাদের কবরের উপর নির্মিত সমাধি মন্দিরগুলোই পিরামিড হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। মিসরে ছোটবড় ৭৫টি পিরামিড আছে। সবচেয়ে বড় এবং আকর্ষনীয় হচ্ছে গিজা'র পিরামিড যা খুফু'র পিরামিড হিসেবেও পরিচিত। এটি তৈরি হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৫০০০ বছর আগে। এর উচ্চতা প্রায় ৪৮১ ফুট। এটি ৭৫৫ বর্গফুট জমির উপর স্থাপিত। এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল ২০ বছর এবং শ্রমিক খেটেছিল ১ লাখ।
পিরামিডটি তৈরি করা হয়েছিল বিশাল বিশাল পাথর খন্ড দিয়ে। পাথর খন্ডের এক একটির ওজন ছিল প্রায় ৬০ টন, আর দৈর্ঘ্য ছিল ৩০ থেকে ৪০ ফুটের মত।
এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল দূর দুরান্তের পাহাড় থেকে। পাথরের সাথে পাথর জোড়া দিয়ে এমনভাবে পিরামিড তৈরি করা হত যে, একটি পাথর থেকে আরেকটি পাথরের মাঝের অংশে একচুলও ফাঁক থাকত না।
আত্মার বাসস্থান :
প্রাচীনকালে মিশরীয়রা
দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতো, মৃত্যুর পরও তাদের আত্মা বেঁচে থাকে। কাজেই পরবর্তী জীবনে যাতে কোনো সমস্যা না
হয়, জীবনটাকে যাতে উপভোগ
করা যায়, সে চিন্তায় মিশরীয়রা
অস্থির থাকতো। ব্যক্তির গুরুত্বের ওপর নির্ভর করে গুরুত্ব আরোপ করা হতো এ ব্যাপারে।
ব্যক্তি যতো গুরুত্বপূর্ণ হতো এ কাজে গুরুত্ব ততো বেশি বেড়ে যেতো। পরবর্তী জীবনের
আরাম-আয়েশের জন্য স্বভাবতই ফারাওদের ব্যাপারেই পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিলো।
ক্ষমতায় আসা নতুন ফারাওয়ের প্রথম কাজ সম্পন্ন করা। প্রত্যেকেই চাইতেন বিশাল আয়তনের
হোক তার সমাধিক্ষেত্র। অনেকেই মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত সমাধিক্ষেত্র তৈরির কাজ চালিয়ে
যেত। এসব সমাধিক্ষেত্র আসলে মৃতের আত্মার ঘর। মিশরীয়রা মনে করত, লাশ বা মৃতদেহ টিকে থাকার ওপরই নির্ভর করে আত্মার
বেঁচে থাকা বা ফিরে আসা। এ কারণেই মৃতদেহ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে মমি করতো তারা। আত্মার বেঁচে থাকার জন্য চাই প্রয়োজনীয় নানা জিনিষ।
তাই নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র, বিশেষ করে খাবার-দাবার মৃতদেহের সাথে দিয়ে দিতো তারা। সমাধিস্তম্ভ প্রধানের দায়িত্ব
ছিলো দস্যুদের হাত থেকে মৃতদেহ আর তার ব্যবহার্য জিনিসপত্র রক্ষা করার। কিন্তু কবরে
সমাধিত ব্যক্তিটি কত বিপুল পরিমাণ বিত্ত আর ক্ষমতাবান ছিল তা জাহিরের উদ্দেশ্যেও নির্মাণ
করা হতো পিরামিড। তাই ফারাওদের মৃতদেহের সাথে কবরস্থ করা হতো বিপুল ধন-সম্পদ। সমাজের
বিত্তশালীদের কবরেও মূল্যবানসামগ্রী দেয়া হতো। এমনকি, নিন্মশ্রেণীর মানুষদের কবরেও সামান্য পরিমাণ হলেও
কিছু খাবার রেখে দেয়া হতো।
পিরামিড তৈরির গোপন রহস্য :
অনেক ওজনের ভারি ভারি পাথর প্রাচীন মিশরীয় শ্রমিকেরা বড় স্লেজ গাড়িতে করে মরুভূমির বালুর উপরে ঠেলে পিরামিড তৈরির স্থানে নিয়ে যেত। স্লেজ গাড়ি সহজে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রাচীন মিশরীয় শ্রমিকেরা পানি ঢেলে বালু ভিজিয়ে দিত।
মিশরের Djehutihotep নামক সমাধির দেওয়ালে একটি চিত্রে দেখা যায়, যেখানে অনেকে মিলে ১টি ভারি মুর্তি স্লেজ গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে আর একজন স্লেজ গাড়ির সামনে থেকে পানি ঢালছে।
ফারাও :
প্রাচীন মিশরীয় রাজারা ফেরাউন বা ফারাও (প্রাচীন মিশরীয় ভাষার অনুমিত উচ্চারণে পার্‘ও’)
নামে
পরিচিত।
প্রাচীন
মিশরের
নতুন
রাজ্যের
সময়
ফেরাউনরা
ধর্মীয়
এবং
রাজনৈতিক
নেতা
ছিল।
"বড়
বাড়ি"
বলতে
তখন
রাজাদের
বাড়িকে
বোঝানো
হত
কিন্তু মিশরীয় ইতিহাসের গতিপথের সাথে সাথে তা হারাতে বসে ছিল এমনকি রাজা, nswt এর জন্য ঐতিহ্যবাহী
মিশরীয়
শব্দের
পরস্পরিক
পরিবর্তনে
মধ্যে
প্রকাশ
করা
হয়েছিল।
যদিও
মিশরের
শাসকরা
সাধারণত পুরুষ ছিল, ফেরাউন শব্দটা বিরলভাবে মহিলা শাসকদের হ্মেত্রেও
ব্যবহার
করা
হত।
ফেরাউনরা
বিশ্বাস
করত
যে
দেবতা হরুসের সাথে জীবনের দেহযুক্ত সমস্ত মিশরের পৌরাণিক শাসক এবংওসিরিসের মৃত্যুতে।
এরা নিজেদেরকে সূর্যের বংশধর মনে করত।
নিজেদেরকে দেবতা বলে
মনে করায় তারা
বংশের বাইরে কাউকে
বিবাহ করত না।
ফলে ভাইবোনেদের মধ্যেই
বিবাহ সম্পন্ন হত।
ফেরাউনরা মৃত্যুর পরও জীবন আছে
বলে বিশ্বাস করত।
তাই তাদের মৃত্যুর
পর পিরামিড বানিয়ে তার নীচে সমাধিকক্ষে এদের দৈনন্দিন
জীবনের ভোগ-বাসনার সমস্ত
সরঞ্জাম রক্ষিত করত।
মৃতদেহকে পচন থেকে
বাঁচাবার জন্য তারা
দেহকে মমি বানিয়ে রাখত এবং
স্বর্ণালঙ্কারে মুড়ে সমাধিকক্ষের
শবাধারে রাখা হত।
মমি :
মমি হলো একটি
মৃতদেহ যা জীবের
শরীরের নরম কোষসমষ্টিকে জলবায়ু (বায়ুর অভাব অথবা
অনাবৃষ্টি অথবা মৌসুমীয়
অবস্থা)
এবং ইচ্ছাকৃত কারণ (বিশেষ দাফন প্রথাগুলো) থেকে রহ্মা করে।
অন্যভাবে বলা যায়, মমি হলো একটি
মৃতদেহ যা মানবিক
প্রযুক্তির মধ্যে অথবা
প্রাকৃতিকভাবে ধ্বংস এবং
হ্ময়প্রাপ্ত হওয়া থেকে
রহ্মা করে।
মমি শব্দের
উৎপত্তি :
মমি শব্দটি
মধ্যে যুগের লাতিন শব্দ mumia থেকে এসেছে, একে পারস্য ফার্সি
ভাষা mūm
(موم) থেকে আনা
হয়েছে যার অর্থ (bitumen)।
মমি তৈরির পদ্ধতি :
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে প্রাচীন মিশরীয়রা মমি তৈরির একটি নির্দিষ্ট নিয়ম বের করেন। কয়েকটি ধাপে এই মমি বানানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হতো।প্রথমে মৃতব্যক্তির নাকের মাঝে ছিদ্র করে মাথার ঘিলু ও মগজ বের করা হতো। এ ক্ষেত্রে লোহা জাতীয় জিনিসের সহায়তা নেয়া হতো। তারপর মৃতদেহের পেটের বাম পাশে কেটে ভেতরের নাড়িভুড়ি বের করে ফেলা হতো। এরপর শরীরের বিভিন্ন পচনশীল অঙ্গ যেমন:
ফুসফুস, বৃক্ক, পাকস্থলি ইত্যাদি বের করা হতো। এসব অঙ্গ বের করার পর আবার পেট সেলাই করে দেয়া হতো। এক্ষেত্রে তারা খুব সতর্কতা অবলম্বন করতো। কারণ পেট সেলাই করতে গিয়ে যদি পেটের ভেতর বাতাস ঢুকে যায়,
তাহলে মৃতদেহ পচে যাওয়ার আশঙ্কা ছিলো। অতঃপর মৃতদেহ ও বের করা অঙ্গগুলোতে লবণ মেখে শুকানো হতো। যখন সব ভালোভাবে শুকিয়ে যেতো,
তখন গামলা গাইন গাছের পদার্থ ও বিভিন্ন প্রকার মসলা মেখে রেখে দেওয়া হতো। চল্লিশ দিন পর লিনেনের কাপড় দ্বারা পুরো শরীর পেঁচিয়ে ফেলা হতো। এরপর তারা মমিগুলোকে সংরক্ষণ করে রাখতো।
আরও কয়টি কবর না দেয়া মৃতদেহ :
মিশরীয় এই ফারাও রা ছাড়া আরো ছয়টি মৃতদেহ এখনো সংরক্ষিত আছে,তাদের কবর দেয়া হয় নি।এগুলো হচ্ছে:
* তোলুঁ মানুষ, জাটল্যান্ড, ডেনমার্ক , কিছু লোক কয়লার খনিতে এই মৃতদেহ অবিকৃত অবস্থায় পায় ১৯৫০ সালে।ধারনা করা হয় খ্রিস্টজন্মের চারশ বছরত আগে এরা বাস করত।
* বকস্টেন মানুষ, ভারবার্গ, সুইডেন ,১৯৩৬ সালে বকস্টেনের মৃতদেহটি আবিষ্কৃত হয় একটি কয়লা খনিতে।ধারনা করা হয় লোকটা বেঁচেছিল ১৪শ’ শতকে।
* জিনজার, লন্ডন, চুলের এবং শরীরের চামড়ার রঙ আদার মত।তাই নাম রাখা হয়েছে জিনজার।ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত।
* হুয়ানিতা, দ্য আইস মেইডেন, পেরু, এটি একটি ইনকা মেয়ের মৃতদেহ।পাচশ বছর বয়স।একে বলা হয় বরফকুমারী।
* লেনিন, মস্কো ,পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মমি ধরা হয় লেনিনের মৃতদেহকে।রাশিয়ার লেলিনকে মমি করে রাখা হয়েছে আগামীদিনের কমরেড দের অনুপ্রানিত করার জন্য।
* কো সামুই, থাইল্যান্ড : ইনি থাইল্যান্ডের একজন মৃত মঠসন্ন্যাসী।তার দেহ ও রাখা হয়েছে মমি করে।
* তোলুঁ মানুষ, জাটল্যান্ড, ডেনমার্ক , কিছু লোক কয়লার খনিতে এই মৃতদেহ অবিকৃত অবস্থায় পায় ১৯৫০ সালে।ধারনা করা হয় খ্রিস্টজন্মের চারশ বছরত আগে এরা বাস করত।
* বকস্টেন মানুষ, ভারবার্গ, সুইডেন ,১৯৩৬ সালে বকস্টেনের মৃতদেহটি আবিষ্কৃত হয় একটি কয়লা খনিতে।ধারনা করা হয় লোকটা বেঁচেছিল ১৪শ’ শতকে।
* জিনজার, লন্ডন, চুলের এবং শরীরের চামড়ার রঙ আদার মত।তাই নাম রাখা হয়েছে জিনজার।ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত।
* হুয়ানিতা, দ্য আইস মেইডেন, পেরু, এটি একটি ইনকা মেয়ের মৃতদেহ।পাচশ বছর বয়স।একে বলা হয় বরফকুমারী।
* লেনিন, মস্কো ,পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মমি ধরা হয় লেনিনের মৃতদেহকে।রাশিয়ার লেলিনকে মমি করে রাখা হয়েছে আগামীদিনের কমরেড দের অনুপ্রানিত করার জন্য।
* কো সামুই, থাইল্যান্ড : ইনি থাইল্যান্ডের একজন মৃত মঠসন্ন্যাসী।তার দেহ ও রাখা হয়েছে মমি করে।
স্ফিংকসের মূর্তি :
চতুর্থ রাজবংশের এক ফেরোর নাম ছিল খাফরে। একদা এক অদ্ভুদ খেয়ালের বশবর্তী হয়ে তিনি মস্ত বড় এক পাহাড় কাটিয়ে নির্মান করলেন অতি আশ্চর্য জনক এক মূর্তি। আশ্চর্যজনক কারন মূর্তিটার শরীরটা সিংহের কিন্তু মাথা মানুষের। এটাই প্রসিদ্ধ স্ফিংক্সের মূর্তি।
.................................................................................
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন