জাতীয় সংসদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন সভা। এটির মোট নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা ৩০০
জন। সংসদ সদস্যগণ জনগণের প্রত্যক্ষ
ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। এছাড়াও ৫০ জন মহিলা সংসদ সদস্য সংরক্ষিত আসনের
মাধ্যমে সংসদ সদস্যরূপে মনোনীত হন।
অধিবেশন স্থল :
বাংলাদেশ জাতীয়
সংসদের অধিবেশন স্থল হল জাতীয় সংসদ ভবন, শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা, বাংলাদেশ। ওয়েবসাইট http://www.parliament.gov.bd
সদস্য পদ :
বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী
জাতীয় সংসদের সদস্যতা লাভের জন্য বাংলাদেশের নাগরিক হওয়াসহ বয়সসীমা অবশ্যই ২৫
বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে। তবে ব্যক্তি দ্বৈত নাগরিকত্ব লাভ করলেও তিনি 'এমপি' হবার যোগ্যতা অর্জন করবেন না।
সংসদ নির্বাচন :
নির্বাচন
|
সংখ্যাগরিষ্ঠ দল
|
দলীয় প্রধান
|
বিরোধী দল
|
বিরোধী দলীয় প্রধান
|
মন্তব্য
|
১ম জাতীয় সংসদ, ১৯৭৩
|
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
|
শেখ মুজিবুর
রহমান
|
প্রযোজ্য
নয়
|
প্রযোজ্য নয়
|
অন্য
কোন রাজনৈতিক দল
১টির বেশী আসন
লাভ করেনি
|
২য় জাতীয় সংসদ, ১৯৭৯
|
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী
দল
(বিএনপি)
|
জিয়াউর রহমান
|
বাংলাদেশ আওয়ামী
লীগ
|
প্রযোজ্য নয়
|
বিরোধী দল ভেঙ্গে যাওয়ায় নেতা নির্বাচন করতে পারেনি
|
৩য় জাতীয় সংসদ, ১৯৮৬
|
জাতীয়
পার্টি
|
এইচ এম এরশাদ
|
বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগ
|
শেখ
হাসিনা
|
|
৪র্থ জাতীয় সংসদ, ১৯৮৮
|
জাতীয় পার্টি
|
এইচ এম
এরশাদ
|
বিরোধী দলীয়
জোট
|
এ. এস. এম. আব্দুর
রব
|
রব এরশাদের
নিযুক্ত বিবোধী দলীয়
নেতা ছিলেন
|
৫ম জাতীয় সংসদ, ১৯৯১
|
বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
|
খালেদা
জিয়া
|
বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগ
|
শেখ
হাসিনা
|
|
৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ, ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬
|
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
|
খালেদা জিয়া
|
বাংলাদেশ ফ্রিডম
পার্টি
|
প্রযোজ্য নয়
|
|
৭ম জাতীয় সংসদ, জুন, ১৯৯৬
|
বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগ
|
শেখ
হাসিনা
|
বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
|
খালেদা
জিয়া
|
|
৮ম জাতীয় সংসদ, ২০০১
|
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী
দল
(বিএনপি)
|
খালেদা জিয়া
|
বাংলাদেশ আওয়ামী
লীগ
|
শেখ হাসিনা
|
|
৯ম জাতীয় সংসদ, ২০০৮
|
বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগ
|
শেখ হাসিনা
|
বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
|
খালেদা
জিয়া
|
|
১০ম জাতীয় সংসদ, ২০১৪
|
বাংলাদেশ আওয়ামী
লীগ
|
শেখ হাসিনা
|
বাংলাদেশ জাতীয়
পার্টি
|
এইচ এম
এরশাদ
|
স্পিকার ও ডেপুটি
স্পিকারদের তালিকা :
সংসদ
|
স্পিকার
|
ডেপুটি স্পিকার
|
মনোনয়নকারী দল
|
হইতে
|
পর্যন্ত
|
১ম সংসদ
|
শাহ আব্দুল হামিদ
|
মোহাম্মদ বায়তুল্লাহ
|
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
|
১০ এপ্রিল, ১৯৭২
|
১ মে, ১৯৭২
|
মোহাম্মদউল্লাহ
|
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
|
৭ এপ্রিল, ১৯৭৩
|
২৬ জানুয়ারি, ১৯৭৪
|
||
আব্দুল মালেক উকিল
|
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
|
২৭ জানুয়ারি, ১৯৭৪
|
৫ নভেম্বর, ১৯৭৫
|
||
২য় সংসদ
|
মীর্জা গোলাম হাফিজ
|
ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদ
|
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
|
২ এপ্রিল, ১৯৭৯
|
২৩ মার্চ, ১৯৮২
|
৩য় সংসদ
|
শামসুল হুদা চৌধুরী
|
মোঃ কোরবান আলী
|
জাতীয় পার্টি
|
১০ জুলাই, ১৯৮৬
|
২৪ এপ্রিল, ১৯৮৮
|
৪র্থ সংসদ
|
শামসুল হুদা চৌধুরী
|
ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদ
|
জাতীয় পার্টি
|
২৫ এপ্রিল, ১৯৮৮
|
৫ এপ্রিল, ১৯৯১
|
আবদুর রহমান বিশ্বাস
|
জাতীয় পার্টি
|
৫ এপ্রিল, ১৯৯১
|
২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৯১
|
||
৫ম সংসদ
|
শেখ রাজ্জাক আলী
|
হুমায়ূন খান পন্নি
|
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
|
১২ অক্টোবর, ১৯৯১
|
১৯ মার্চ, ১৯৯৬
|
৬ষ্ঠ সংসদ
|
শেখ রাজ্জাক আলী
|
এল. কে. সিদ্দিকী
|
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
|
১৯ মার্চ, ১৯৯৬
|
১৪ জুলাই, ১৯৯৬
|
৭ম সংসদ
|
হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী
|
এডভোকেট আব্দুল হামিদ
|
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
|
১৪ জুলাই, ১৯৯৬
|
১০ জুলাই, ২০০১
|
এডভোকেট আব্দুল হামিদ
|
অধ্যাপক আলী আশরাফ
|
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
|
১২ জুলাই, ২০০১
|
৮ অক্টোবর, ২০০১
|
|
৮ম সংসদ
|
ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার
|
মোঃ আখতার হামিদ সিদ্দিকী
|
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
|
২৮ অক্টোবর, ২০০১
|
২৫ জানুয়ারি, ২০০৯
|
৯ম সংসদ
|
এডভোকেট আব্দুল হামিদ
|
কর্নেল শওকত আলী
|
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
|
২৫ জানুয়ারি, ২০০৯
|
২৪ এপ্রিল, ২০১৩
|
কর্নেল শওকত আলী (ভারপ্রাপ্ত)
|
শূন্য
|
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
|
২৪ এপ্রিল, ২০১৩
|
৩০ এপ্রিল, ২০১৩
|
|
শিরীন শারমিন চৌধুরী
|
কর্নেল শওকত আলী
|
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
|
৩০ এপ্রিল, ২০১৩
|
চলমান
|
নকশা এবং
নির্মান :
দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলীর অধিকারী এই সংসদ ভবনের মূল নক্সা অঙ্কন করেন বিখ্যাত স্থপতি লুই কান। লুই ইসাডোর কান বা সংক্ষেপে লুই আই. কান। (জন্ম ইটযে-লেইব শ্মুইলোস্কি-তে) (ফেব্রুয়ারি ২০, ১৯০১ - মার্চ ১৭, ১৯৭৪) একজন পৃখিবীবিখ্যাত মার্কিন স্থপতি
যিনি এস্তোনীয় ইহুদী বংশোদ্ভূত।
তিনি
মূলত আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া আর পেনসিলভানিয়ায় স্থাপত্য চর্চা
করেছিলেন। তার উল্লেখ যোগ্য স্থাপত্য- ইয়েল
বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট গ্যালারি, সার্ক
ইনস্টিটিউট, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট- আহমেদাবাদ, ফিলিপ্স এক্সেটার একাডেমী লাইব্রেরী, কিমবেল আর্ট মিউজিয়াম ও জাতীয় সংসদ ভবন। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন তাঁর একটি বিখ্যাত
কীর্তি ।
ইয়েল থেকে
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থপতি মাজহারুল ইসলাম (২৫
জুলাই, ১৯২৩ - ১৪ জুলাই, ২০১২) এর উপদেশে লুই কান’কে স্বাগতম জানানো হয়। তাঁর পৃষ্ঠপোষক, ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে এক মিলিটারী ক্যু এর মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন ও পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানকে একত্রিত করার প্রতিজ্ঞা
করেন – যা ইসলামিক গণতন্ত্রের অধীনে প্রায় ১,৬০০ কিমি (৯৬০ মাইল) ব্যাবধানে বিভক্ত ছিল। প্রাথমিকভাবে
কান’কে পশ্চিম পাকিস্তানের ইসলামাবাদে সরকারের নির্বাহী বিভাগের
মূল ভবনের স্থপতি হিসেবে
নির্বাচন করা হলেও পরবর্তীতে সে কাজ আর এগোয়নি। প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে ঢাকা’র এই স্থাপনা নির্মাণের জন্য ঠিক বিমানবন্দরের সাথেই
[তেজগাওঁ এয়ারপোর্ট - তখনকার সময়ে অঞ্চলের
একমাত্র বিমানবন্দর] – এই বিমানবন্দরটির মতই বিশাল জমি দেয়া হয় লুই কান’কে। আর তাই কান’ দিল্লী ও আগ্রার মুঘল প্রাসাদগুলোর অনুকরণে একাধিক “দুর্গ” বা citadel নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। যার একটি “দুর্গ” বা ভবন, সংসদ হিসেবে ও অন্যান্য ভবনগুলো
অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হবে যেমন বিদ্যালয়, পাঠাগার, যাদুঘর কিংবা মার্কেট ইত্যাদি।
তিনি এই দুই
মূল “দুর্গ”কে ইংরেজী V আকৃতির একটি লেকের মাধ্যমের বিভাজিত করেন, যা দেশটির নদীমাতৃক পটভুমিকে আলোকিত করবে: পৃথিবীর সর্বনিম্ন পানির উচ্চতায় থাকা গঙ্গা নদীর ব-দ্বীপ
বহনকারী এই অঞ্চল দিয়ে বয়ে যাওয়া অসংখ্য নদী দেশটির মূল প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট। কান এও চিন্তা করেন যে, লেক খননে যা অতিরিক্ত মাটি সড়ানো হবে তা দিয়ে এই স্থাপনা কে
নিয়মিত বন্যা থেকেও সুরক্ষিত করা
যাবে।
১৯৬৮ সালে
ঢাকায় এই ভবনগুলোর কাজ শুরু হলেও ১৯৭১ সালে কাজ বন্ধ হয়ে যায়, যখন পূর্ব পাকিস্তান, পশ্চিম
পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে “বাংলাদেশ” নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধবিধ্বস্ত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে জর্জরিত নতুন এই দেশ পর্যায়ক্রমে স্থাপনাটি নির্মাণের কাজ
চালিয়ে যেতে থাকে। কাজ শেষে ১৯৮২ সালে এসে লুই কান’ এর পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ নেয়। গণতন্ত্রের স্বার্থে সৃষ্ট
তাঁর এই প্রাসাদসম স্থাপনার
নির্মাণকাজের সমাপ্তি ঘটে।
লেকের চারপাশে অবস্থিত সব গৌণ স্থাপনাগুলোকে কান মোটা ইটের দেয়াল
দিয়ে বেষ্টিত করেন, আর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা মূল সংসদ ভবনটির জন্য কংক্রীট
ব্যবহার করেন যা পুরো স্থাপনাকে “মডার্ণ স্থাপত্য”এর অধীনে নিয়ে আসে। শিল্পযুগ-পুর্ববর্তী কায়দায় এই স্থাপনা নির্মাণে অসংখ্য শ্রমিকের প্রয়োজন
হয়, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন নারী; যারা মাথায় ঝুড়িভর্তি তাজা কংক্রীট বহন করে প্রস্তুত খাঁচে ঢালতো। এই ধীরগতির প্রক্রিয়াতে পুরো
স্থাপনা জুড়ে ‘আবলাক‘ এর আবির্ভাব ঘটে, যা প্রতিদিনের কাজ শেষে দেড় মিটার বা ৫ ফিট পুরু শ্বেত মারবেলের স্তর দিয়ে আটকিয়ে আরো
স্পষ্ট করে দেয়া হতো। [আবলাক - আরবী শব্দ: বিভিন্ন স্তরে কংক্রীটের পরিমাণের সামান্যতম তারতম্যের কারণে একেক স্তর একেক রকম দেখায়]
মারবেল এর স্তর
দিয়ে “আবলাক” এর সৃষ্টি
স্থাপনার
দক্ষিণে থাকা ইটের চওড়া প্লাটফর্ম থেকে উত্তরে তাকালে মূল সংসদ ভবনের বিশালাকায় বৃত্তাকার ও বর্গাকৃতির খিলানগুলো যেন মধ্যযুগীয় ইউরোপের কোন
দুর্গের সুরক্ষা বুরুজ বা bastion এর কথা মনে করিয়ে দেয়; অন্যদিকে স্থাপনার মূল পরিকল্পনা বা
প্ল্যানের দিকে তাকালে হালকা ঘোড়ানো “হাশত
বিহিশ্ত” – এক ফার্সি স্থাপত্যশৈলীর নয়-বর্গীয়
ধারার (nine-square
scheme) অনুকরণ লক্ষ্য করা যায়, যার আটটি খন্ড কেন্দ্রে থাকা নবম খন্ড থেকে সমান তালে বৃত্তাকারে চারপাশে ছড়িয়ে আছে [ফুলের পাঁপড়ির মত]।
ক্লায়েন্ট বা মক্কেলরা [এক্ষেত্রে তৎকালীন পাকিস্তানী
সরকার] মূল সংসদ হলের উপর একটা গম্বুজের প্রস্তাব করলেও লুই কান একটা চ্যাপ্টা অষ্টভুজাকৃতির পাখার মত একটা স্থাপনা [flattened octagon of radiating Vierendeel
trusses] দিয়ে মূল হলটি ঢাকার সিদ্ধান্ত নেন, যা দেখতে যেন বিশাল একটা [তিব্বতীয়] উপাসনা চড়কির মত। দুর্গসম এই স্থাপনায় ঢোকার জন্যও তিনি মধ্যযুগীয় ইউরোপিয়ান ফটকের অনুকরণে বৃত্তাকার দুটো টাওয়ারের
মাঝে বৃহদাকার একটা আগমন পথ বা opening তৈরী করেন [এই
ধরনের ফটককে barbican বলা হয়]। মূল স্থাপনায় ঢোকার জন্য এই সম্পুর্ণ আলাদা
খন্ডটি মূল পরিকল্পনা থেকে সামান্য কাত করে [সৌদি
আরবের] মক্কা নগরীর দিকে তাক করানো হয়েছে [বা কিবলামুখী করা হয়েছে]। পুরো স্থাপনা জুড়েই লুই কান যেন বিভিন্ন পাশ থেকে একাধিক বিশালকায়
বৃত্তাকার, বর্গাকৃতির ও ত্রিভুজাকার খন্ড কেটে নিয়েছেন যা ভবনের
আভ্যন্তরিন দেয়ালগুলোকে প্রকাশ করে।
এভাবে সৃষ্ট
করা আলোবিচ্ছিন্ন গর্তগুলো ফার্সি স্থাপত্যশৈলীর আরেক বৈশিষ্ট – পিশ্তাক‘ এর কথা যেমন
মনে করিয়ে দেয়, তেমনি একইসাথে ক্ষেত্রবিশেষে মিসেনি’র এত্রেয়া’র কোষাগারের ফটক [entry to Treasure House of Atreus
at Mycenae], কিংবা এতিয়েঁ-লুই বুলে‘র আলো-আঁধারির উপর কাজের উপস্থিতি যেন
টের পাওয়া যায়।
জাতীয় সংসদের মূল ভবনটি তিনটি অংশে বিভক্ত - মূল
প্লাজা যার আয়তন ৮২৩,০০০ বর্গফুট; দক্ষিন প্লাজা যার আয়তন ২২৩,০০০ বর্গফুট এবং প্রেসিডেন্ট প্লাজার আয়তন ৬৫,০০০ বর্গফুট। মূল ভবনের বাইরে আছে এমপি
হোস্টেল এবং একটি কৃত্রিম লেক দ্বারা মূল ভবনটি বেষ্টিত।
কান’এর এই সংসদ ভবন যে পরিমাণ চড়াই-উতড়াই পাড়ি দিয়ে নির্মিত হয়েছে তা কোন
অংশে কম অলৌকিক নয়: এক মার্কিন নাগরিক, পারবারিকভাবে যার ইহুদী হিসেবে শক্তিশালী পরিচয় রয়েছে, সে মুসলিমপ্রধান একটি দেশের জন্য এত বড় একটা স্থাপনা ডিজাইন করছেন – তাও এতো জটিল ডিজাইন যা কিনা সম্পুর্ণ সনাতনী পদ্ধতিতে ধীরক্রমে শেষ করা
হয়েছে: যার উপলক্ষ ছিল সুস্থ গণতান্ত্রিক চর্চার এক পীঠভুমি সৃষ্টি, এমন একটি দেশে যেখানে একাধিকবার একনায়কতন্ত্রের আস্ফালন ঘটেছে। আর এরই মধ্যে আবার অতীত থেকে নেয়া ইউরোপীয় ও প্রাচ্যের বিভিন্ন
শিল্পশৈলীর এক অসামান্য মিশেল সৃষ্টি করে কান একই সময়ে পুরনোকে বিদায় জানানোর চেষ্টাও করছেন। হয়তোবা ব্রিটিশ-পরবর্তী নতুন ধারার যে
স্থাপত্যশৈলী এই অঞ্চলে প্রশার হচ্ছিল তার প্রতি কান কোন পাত্তাই দেননি, কিন্তু যারা এর পৃষ্ঠপোশকতা করেছে [এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ] তাদের জন্য
এটা সত্যিকার অর্থেই নতুন এক সংযোজন। দৈনন্দিন যান্ত্রিক মার্কিন জীবনের আধুনিকতা থেকে বের হয়ে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করার যে সুযোগ লুই
কান বেছে নিয়েছেন, তারই ফলাফল হচ্ছে এই মাস্টারপিস।
.................... .............. ................ ........*............. ................... ................. ................