গোলাপ :
Rosaceae পরিবারের Rosa গোত্রের এক প্রকারের গুল্ম জাতীয় গাছে গোলাপ ফুল ফুটে থাকে। পৃথিবীতে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ প্রাজাতির গোলাপ ফুল রয়েছে। এই
সমস্ত প্রজাতির মধ্যে
রয়েছে বিভিন্ন উপপ্রজাতি। সব মিলিয়ে প্রায় ৫৫০টি আলাদা আলাদা গোলাপের অস্তিত্ব রয়েছে পৃথিবী জুড়ে। গোলাপ
পাঁপড়ির গড়ন ও বিন্যাসে
একরূপ নান্দনিকতা রয়েছে যা মানুষকে আকৃষ্ট করে।
সুগন্ধী গোলাপের ঘ্রাণও মানুষের প্রিয়। গোলাপীবর্ণ ছাড়াও নানা বর্ণের গোলাপ জন্মে থাকে। গোলাপ
গাছের কাণ্ডে কাঁটা থাকে। এর পাতার কিনারাতেও ক্ষুদ্র কাঁটা রয়েছে। গোলাপের আদি নিবাস এশিয়া মহাদেশে। অল্প
কিছু প্রজাতির আদি বাস ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, ও উত্তরপশ্চিম আফ্রিকা মহাদেশে।
ফুলের সৌন্দর্য ও সুবাসের
জন্য গোলাপ বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত।
কয়েক জাতের
বিদেশী গোলাপ :
পাপা মিলাঁ, আইসবার্গ, রোজ গুজার্ড, বেংগলি, কুইন এলিজাবেথ, জুলিয়াস রোজ, ডাচ গোল্ড, সানসিল্ক, কিংস র্যানসন উল্লেখযোগ্য।
কয়েক জাতের
বাংলাদেশী গোলাপ :
ফাতেমা ছাত্তার, শিবলী, রাহেলা
হামিদ,
পিয়ারী, ভাসানী, শের-এ-বাংলা, ১৯৫২, জয়ন্তি
উল্লেখযোগ্য।
_____________________________
গাঁদা :
গাঁদা বা গন্ধা একটি সুগন্ধী ফুল যা সর্বত্র সহজে হয়ে থাকে এবং গৃহসজ্জায় ব্যবহৃত হয়। এটি Compositae পরিবারের একটি সদস্য, বৈজ্ঞানিক নাম Tagetes
erecta। গাঁদা ফুল বিভিন্ন জাত ও রঙের দেখা যায়। এই ফুল সাধারণত উজ্জল হলুদ ও কমলা হলুদ হয়ে থাকে। সাধারণত: এটি শীতকালীন ফুল হলেও বর্তমানে এটি গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালেও চাষাবাদ হয়ে থাকে। বাগানের শোভা বর্ধন ছাড়াও বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান, পূজা-পার্বন ও গৃহসজ্জায় এর ব্যাপক ব্যবহার ফুলটিকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।
বাংলাদেশে প্রধানত দুই ধরনের গাঁদা পাওয়া যায়ঃ
* আফ্রিকান গাঁদাঃ এই শ্রেণীর গাঁদা হলুদ রঙের, গাছের আকৃতি বেশ বড়। উল্লেখযোগ্য জাতসমূহ হলঃ ইনকা, গিনি গোল্ড, ইয়েলা সুপ্রিম, গোল্ডস্মিথ, ম্যান ইন দি মুন, ইত্যাদি।
* ফরাসি গাঁদাঃ এই শ্রেণীর গাঁদা কমলা হলুদ হয়ে থাকে। এজন্য এদের রক্তগাঁদাও বলা হয়। এর গাছ ক্ষুদ্রাকৃতির। পাপড়ির গোড়ায় কালো ছোপ থাকে। উল্লেখযোগ্য জাতসমূহ হলঃ মেরিয়েটা, হারমনি, লিজন অব অনার, ইত্যাদি।
এছাড়াও সাদা গাঁদা, জাম্বো গাঁদা, হাইব্রিড এবং রক্ত বা চাইনিজ গাঁদার চাষ হয়ে থাকে।
_____________________________
শিউলি ফুল :
শিউলি ফুল বৈজ্ঞানিক নাম: Nyctanthes
arbor-tristis, এটি হচ্ছে নিক্টান্থেস (Nyctanthes) প্রজাতির একটি ফুল। লাতিন Nyctanthes-এর অর্থ হচ্ছে “সন্ধ্যায় ফোটা” এবং arbor-tristis-এর মানে হচ্ছে “বিষণ্ন গাছ”। সন্ধ্যায় ফোটা আর সকালে ঝরা ফুলের মাঝে বিষণ্নভাবে দাঁড়িয়ে থাকাটাই এই রকম নামকরণের কারণ বলে ধারণা করা হয়। এটি দক্ষিণ এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ড থেকে পশ্চিমে বাংলাদেশ, ভারত, উত্তরে নেপাল, ও পূর্বে পাকিস্তান পর্যন্ত এলাকা জুড়ে দেখতে পাওয়া যায়। এটি শেফালী নামেও পরিচিত। এই ফুল পশ্চিমবঙ্গের
ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের রাষ্ট্রীয় ফুল। শিউলি গাছ নরম ধূসর ছাল বা বাকল বিশিষ্ট হয় এবং ১০ মিটারের মত লম্বা হয়। গাছের পাতা গুলো ৬-৭ সেন্টিমিটার লম্বা ও সমান্তরাল প্রান্তের বিপরীতমুখী থাকে। সুগন্ধি জাতীয় এই ফুলে রয়েছে পাঁচ থেকে সাতটি সাদা বৃতি ও মাঝে লালচে-কমলা টিউবের মত বৃন্ত। এর ফল চ্যাপ্টা ও বাদামী হৃদপিণ্ডাকৃতির। ফলের ব্যাস ২ সেন্টিমিটার এবং এটি দুই ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ভাগে একটি করে বীজ থাকে।এই ফুল শরৎকালে ফোটে। এর ফুলগুলি রাতে ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়। শরৎ ও হেমন্ত কালের শিশির ভেজা সকালে ঝরে থাকা শিউলি অসম্ভব সুন্দর দৃশ্য তৈরি করে। এই ফুল হলুদ রঙ তৈরী করতে ব্যবহার করা যায়।
প্রচলিত নাম :
|
এলাকা ভিত্তিক নাম :
|
* Night-flowering Jasmine
* Harsingar (হারসিঙ্গার)
*
কোরাল জেসমিন
*
পারিজাত
*
শেফালিকা
*
পারিজাতা
*
পারিজাতাকা
*
রাগাপুস্পি
*
খারাপাত্রাকা
*
প্রজক্তা
|
*
বাংলা ভাষায় – শিউলি বা শেফালি
*
সংস্কৃত ভাষায় – নালাকুমকুমাকা, হারসিঙ্গারাপুস্পক, সুকলাঙ্গি, রাজানিহাসা,
মালিকা, অপরাজিতা, বিজয়া, নিসাহাসা, প্রহার্ষিনী, প্রভোলানালিকা, বাথারি, ভুথাকেশি, সীতামাঞ্জারি, সুবাহা, নিশিপুস্পিকা, প্রযক্তা, প্রযক্তি।
*
তামিল ভাষায় – পাভাঝা মাল্লি বা পাভালা মাল্লি
*
ওড়িয়া ভাষায় – গঙ্গা শিউলি
*
মনিপুরী ভাষায় - সিঙ্গারেই
*
অসমিয়া ভাষায় - শেওয়ালি (শেৱালি)
|
কদম :
কদম
বৈজ্ঞানিক নাম: Anthocephalus indicus, যা নীপ নামেও পরিচিত। এ ছাড়া বৃত্তপুষ্প, মেঘাগমপ্রিয়, কর্ণপূরক, ভৃঙ্গবল্লভ, মঞ্জুকেশিনী, পুলকি, সর্ষপ, প্রাবৃষ্য, ললনাপ্রিয়, সুরভি, সিন্ধুপুষ্পও কদমের নাম। বাংলাদেশ, ভারতের উষ্ণ অঞ্চল, চীন, মালয় কদমের আদি নিবাস। কদমের কাণ্ড সরল, উন্নত, ধূসর থেকে প্রায় কালো এবং বহু ফাটলে রুক্ষ, কর্কশ। শাখা অজস্র এবং ভূমির সমান্তরালে প্রসারিত। পাতা হয় বড় বড়, ডিম্বাকৃতি, উজ্বল-সবুজ, তেল-চকচকে এবং বিন্যাসে বিপ্রতীপ। উপপত্রিকা অত্যন্ত স্বল্পস্থায়ী
বিধায় পরিণত পাতা অনুপপত্রিক। বোঁটা খুবই ছোট। নিবিড় পত্রবিন্যাসের জন্য কদম ছায়াঘন। শীতে কদমের পাতা ঝরে এবং বসন্তে কচি পাতা গজায়। সাধারণত পরিণত পাতা অপেক্ষা কচি অনেকটা বড়। কদমের কচি পাতার রঙ হালকা সবুজ। কদমের একটি পূর্ণ মঞ্জরিকে সাধারণত একটি ফুল বলেই মনে হয়। তাতে বলের মতো গোল, মাংসল পুষ্পাধারে অজস্র সরু সরু ফুলের বিকীর্ণ বিন্যাস। পূর্ণ প্রস্ফুটিত মঞ্জরির রঙ সাদা-হলুদে মেশানো হলেও হলুদ-সাদার আধিক্যে প্রচ্ছন্ন। প্রতিটি ফুল খুবই ছোট, বৃতি সাদা, দল হলুদ, পরাগচক্র সাদা এবং বহির্মুখীন, গর্ভদণ্ড দীর্ঘ। ফল মাংসল, টক এবং বাদুড় ও কাঠবিড়ালির প্রিয় খাদ্য। ওরাই বীজ ছড়ানোর বাহন। গাছের ছাল জ্বরের ঔষধ হিসেবেও উপকারী।
_____________________________
গন্ধরাজ :
খুবই পরিচিত একটা ফুল এর অন্যান্য স্থানীয় নামের মধ্যে Gardenia, Cape
jasmine,Gandhraj উল্লেখযোগ্য। এর বৈজ্ঞানিক নাম Gardenia jasminoides এটি
Rubiaceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ। গার্ডেনিয়া
শব্দটির উৎস; প্রকৃতিবিদ
ড. আলেক্সান্ডার গার্ডেনের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে। আফ্রিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলেশিয়া
ও ওশিয়ানিয়ার ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের চিরহরিৎ পুষ্পল গাছ এটি। এর প্রায়
আড়াইশো রকমের প্রজাতি পাওয়া যায়। গাছের দৈর্ঘ্য তিন থেকে প্রায় পঞ্চাশ ফুট
অবধি হতে পারে। সাদা রঙের ফুল, সুগন্ধযুক্ত ও বহুদল বিশিষ্ট। ফোটার সময় সাদা থাকলেও ক্রমে
হাল্কা হলুদ বর্ণ ধারণ করে এই ফুল। ফুলের ব্যাস তিন-চার ইঞ্চি হয়। পাতা দৈর্ঘ্যে
তিন থেকে ছয় ইঞ্চি অবধি হয়, পাতার রঙ গাঢ় সবুজ ও উপরিতল তেলতেলে। উচ্চ
আর্দ্রতা ও উজ্জ্বল আলোয় গাছ ভালো বাড়ে। এই ফুলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ফুল শুকিয়ে যাবার পরও সুগন্ধ থেকে যায় অনেকদিন। গন্ধরাজের সুবাস মাতাল করা, বিশেষত রাতের অন্ধকারে গন্ধের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়।
ফুলের মৌসুম বসন্ত
থেকে শুরু করে একেবারে বর্ষা-শরৎ অবধি বিস্তৃত।
_____________________________
বকুল :
বকুল বৈজ্ঞানিক নাম Mimusops elengi, এটি হচ্ছে মিনাসপ্স্ (Minasops) প্রজাতির একটি ফুল। বকুল একটি চিরহরিৎ বৃক্ষ। মাঝারি আকারের গাছ, এটি ১৬ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এই বৃক্ষের পাতা গুলো মসৃন, গাড় সবুজ ও ঢেউ খেলানো, আকারে ৫ থেকে ১৪ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৫ থেকে ৬ সেন্টিমিটার চওড়া হয়। বকুল গাছের ছাল মোটা, আর রঙ গাঢ় কালচে বাদামী কিংবা কালচে ছাই রঙের হয়ে থাকে। ফুল গুলো দেখতে ছোট ছোট তারার মতো। এই ফুল রাত্রে ফোটে এবং সারাদিন ধরে টুপটাপ ঝরতে থাকে। বকুল ফুলের সুবাসে থাকে মিষ্টি গন্ধ। ফুল শুকিয়ে গেলেও এর সুবাস অনেক দিন পর্যন্ত থাকে।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর তীরবর্তী এলাকার ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, বার্মা, ইন্দো-চীন, থাইল্যান্ড, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ এলাকা জুড়ে এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। তবে, মালয়েশিয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, নিউ ক্যালিডোনিয়া (ফ্রান্স), ভানুয়াটু, এবং উত্তর অস্ট্রেলিয়াতে এই গাছ চাষ করা হয়।
বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে এর ব্যবহার রয়েছে। বকুল ফুল, ফল, পাকা ফল, পাতা, গাছের ছাল, কাণ্ড, কাঠ সব কিছুই কাজে লাগে :
- ফুল - ফুলের রস হৃদযন্ত্রের অসুখ, leucorrhoea, menorrhagia নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়।
- শুকনা ফুলের গুড়া দিয়ে তৈরী ঔষধ "আহওয়া" নামক এক ধরনের কঠিন জ্বর, মাথা ব্যাথা এবং ঘার, কাঁধ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে সৃষ্ট ব্যাথার নিরাময়ে ব্যবহার হয়।
- শুকনা ফুলের গুড়া মাথা ঠান্ডা রাখে ও মেধা বাড়াতে উপকারী।
- শুকনো বকুল ফুলের গুড়া নাক দিয়ে নিঃশ্বাসের সাথে টেনে নিলে মাথা ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।
- বকুল গাছের ছাল - গাছের ছাল দিয়ে কাটা ছেঁড়ার ক্ষত পরিষ্কার করা যায়। এছাড়াও বকুল গাছের ছাল ও তেঁতুল গাছের ছাল সিদ্ধ করে পাচনের মাধ্যমে তৈরি তরল ঔষধ ত্বকের নানারকম রোগ সারাতে ব্যবহৃত হয়।
- বকুলের কাণ্ড - গাছের কাণ্ড থেকে পাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এক ধরনের ঔষধ তৈরি করা যা দাঁতের সমস্যা নিরাময়ে অনেক উপকারী। এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় ফিলিপাইনে। এছাড়াও এই ঔষধ জ্বর ও ডায়রিয়া থেকে আরোগ্য লাভের জন্যে ব্যবহার করে ফিলিপাইনের অধিবাসীরা। স্থানিয় লোকেরা এই তরল পানি দিয়ে গার্গল করে গলার অসুখের নিরাময়ের জন্যে। মুখ ধোয়ার তরল প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে এই তরল ঔষধ যা মাড়ি শক্ত করে।
- বকুলের পাতা সিদ্ধ করে মাথায় দিলে মাথা ব্যাথা কমে যায়। পাতার রস চোখের জন্যেও উপকারী।
জবা :
একটি চিরসবুজ গুল্ম, বৈজ্ঞানিক ক্যারলাস লিনেয়াস জবার নাম দেন
হিবিস্কাস রোসা-সিনেন্সিস।
লাতিন শব্দ 'রোসা সিনেন্সিস'-এর অর্থ 'চীন দেশের
গোলাপ',
যদিও জবার সঙ্গে
গোলাপের সম্পর্ক নেই।
চীনদেশে এই গাছটি 'zhū jǐn 朱槿' নামে পরিচিত। উচ্চতা
২.৫-৫ মি(৮-১৬ ফিট)
ও প্রস্থ
১.৫-৩ মি(৫-১০ ফিট)।
এর পাতাগুলি
চকচকে ও ফুলগুলি উজ্জ্বল লাল
বর্ণের ও ৫টি পাপড়ি যুক্ত।
ফুলগুলির ব্যাস ১০
সেমি(৪
ইঞ্চি) এবং
গ্রীষ্মকাল ও শরতকালে ফোটে। যেহেতু
জবা ১০°সেলসিয়াসের নীচের
তাপমাত্রা সহ্য করতে
পারে না,
তাই নাতিশীতোষ্ণ
অঞ্চলে জবা গাছকে গ্রীনহাউসে রাখা
হয়। জবা গাছের
বিভিন্ন রকমের সংকর প্রজাতি
আছে, যাদের
ফুলের রঙ সাদা,
হলুদ,কমলা
ইত্যাদি হতে পারে।
_____________________________
টগর :
টগর
ঝোপঝাড়বিশিষ্ট
চিরহরিৎ
গাছ। আগে টগরের উদ্ভিদতাত্ত্বিক
নাম
ছিল
Ervatamia
coronaria stapf. এখন বৈজ্ঞানিক
নাম
Tabernaemonlana
divaricata(L.) Br. যা
Apocynaceae পরিবারের
অন্তর্ভুক্ত। সারা পৃথিবীতে এই গণের ৪০ টি প্রজাতি আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতে ৪টি প্রজাতি পাওয়া যায়। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এই গাছ ভারত উপমহাদেশে এসেছে।
টগর দুই রকম- থোকা টগর ও একক টগর। বাংলাদেশ ও ভারতে এই দুই রকমের টগর পাওয়া যায়। একটি টগরের একক পাপড়ি, অন্যটির গুচ্ছ পাপড়ি। এদের "বড় টগর" ও "ছোট টগর" বলা হয়।
কাণ্ডের ছাল ধূসর। গাছের পাতা বা ডাল ছিঁড়লে সাদা দুধের মতো কষ ঝরে বলে একে "ক্ষীরী বৃক্ষ" বলা যায়। পাতা ৪-৫ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা ও এক দেড় ইঞ্চি চওড়া হয়। পাতার আগা ক্রমশ সরু। ফুল দুধ-সাদা। সারা বছর ফুল ফোটে। থোকা টগরের সুন্দর মৃদু গন্ধ হয় কিন্তু একক টগরের গন্ধ নেই। ফুল থেকে ফলও হয়। তার মধ্যে ৩ থেকে ৬ত টি বীজ হয়। বড় টগরের বোঁটা মোটা এবং একক ফুল হয়। পাতাও একটু বড়। টগরের মূল ও শেকড় ওষুধে ব্যবহৃত হয়। শেকড় তেতো ও কটু স্বাদের। এতে কৃমি ও চুলকানি দূর হয়।
শাপলা :
শাপলা (ইংরেজি: Nymphaeaceae) পুষ্প বৃক্ষ পরিবারের এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ। এ পরিবারভূক্ত সকল উদ্ভিদই শাপলা নামে পরিচিত। সাদা শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল সাধারণত ভারত উপমহাদেশে দেখা যায়। এই উদ্ভিদ প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। থাইল্যান্ড ও মায়ানমারে এই ফুল পুকুর ও বাগান সাজাতে খুব জনপ্রিয়। সাদা শাপলা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ইয়েমেন, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার প্রভৃতি দেশের পুকুর ও হ্রদে দেখা যায়। এই ফুল পাপুয়া নিউগিনি এবং অস্ট্রেলিয়ার কিছু এলাকায়ও দেখা যায়। এই ফুল যেমন দেখা যায় চাষের জমিতে, তেমনই হয় বন্য এলাকায়। কাটা ধান ক্ষেতের জমে থাকা অল্প পানিতে এই ফুল ফুটে থাকতে দেখা যায়। বিশ্বে এই উদ্ভিদের প্রায় ৩৫টি প্রজাতি পাওয়া গেছে। শাপলা ফুল দিনের বেলা ফোটে এবং সরাসরি কাণ্ড ও মূলের সাথে যুক্ত থাকে। শাপলার পাতা আর ফুলের কাণ্ড বা ডাটি বা পুস্পদণ্ড পানির নিচে মূলের সাথে যুক্ত থাকে। আর এই মূল যুক্ত থাকে মাটির সঙ্গে এবং পাতা পানির উপর ভেসে থাকে। মূল থেকেই নতুন পাতার জন্ম নেয়। পাতাগুলো গোল এবং সবুজ রঙের হয় কিন্তু নীচের দিকে কালো রঙ। ভাসমান পাতাগুলোর চারদিক ধারালো হয়। পাতার সাইজ ২০ থেকে ২৩ সেন্টিমিটার এবং এদের ব্যাপ্তি প্রায় ০.৯ থেকে ১.৮ মি।
শাপলা ফুল নানা রংয়ের দেখা যায় যেমনঃ গোলাপী, সাদা, নীল, বেগুনি। এই ফুলে ৪ থেকে ৫ টি বৃতি থাকে ও ১৩ থেকে ১৫ টি পাপড়ি থাকে। ফুলগুলো দেখতে তারার মত মনে হয়। কাপের সমান বৃতিগুলো ১১-১৪ সেমি হয়ে থাকে। প্রায় বছরের সব সময় শাপলা ফুটতে দেখা যায় তবে বর্ষা ও শরৎ এই উদ্ভিদ জন্মানোর শ্রেষ্ঠ সময়।
এই ফুল শ্রীলংকারও জাতীয় ফুল। শ্রীলংকায় এই ফুল Nil Mānel নীল মাহানেল নামে পরিচিত। শ্রীলংকার ভাষায় নীল থেকে এই ফুলকে ইংরেজিতে অনেক সময় blue
lotus বলা হয়।
_____________________________
পদ্ম :
বৈজ্ঞানিক নাম: Nelumbo nucifera, পদ্মফুলের বহু নাম রয়েছে: পদ্ম, কমল, শতদল, সহস্রদল, উত্পল, মৃণাল, পঙ্কজ, অব্জ, অম্বুজ, নীরজ, সরোজ, সরসিজ, সররুহ, নলিনী, অরবিন্দ, রাজীব, ইন্দিরা, কুমুদ, তামরস ইত্যাদি।পদ্মফুল ভারতের জাতীয় ফুল। বিশাল বড় তার পাতা, ফুলও তাই৷ ফুল প্রায় প্রশস্তে এক ফুট আর পাতার প্রশস্ততা তিন-চার ফুট৷ কন্টকময় পাতা, বোঁটা এবং ফুলের বৃতাংশ৷ ফোটে শীতের শেষে৷ চওড়ায় ৪০-৫০ সেন্টিমিটার৷ ফুলের বাইরে কাঁটার প্রতিরক্ষা৷ লতানো জলজ উদ্ভিদ চাঁদ মালার গোল পাতা ভেসে থাকে পানির উপর৷ এদেশেরই জলজ উদ্ভিদ এটি৷
_____________________________
পারুল :
পারুল (Cydista aequinoctialis ) এটি Bignoniaceae পরিবারের অন্তর্গত একটি
উদ্ভিদ। অন্যান্য স্থানীয় নামের মধ্যে আছে লতা পারুল বা পারুল লতা, Garlic Vine ইত্যাদি। গাছ ৩০ থেকে ৬০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। গাছ লোমযুক্ত, ছাল ধুসরবর্ণ, কাঠ পীতাভ ধুসরবর্ণ, পাতা ১২ থেকে ১৮ ইন্চি লম্বা, পক্ষাকার। ফুল তাম্রবর্ণ বা রক্তবর্ণের, পুষ্পস্তবক ফিকে বা ঘন বেগুনি রংয়ের। ফুলের পাপড়ি ৫ টি, পুষ্পাধার ঘন্টার মত। সাধারনত গ্রীষ্মকালে ফুল হয়। আগেরদিনে পানিতে পারুল ফুল ফেলে পানিকে সুগন্ধি করা হত বলে এ ফুল অম্বুবাসী নামেও পরিচিত। পারুল জন্মে ভারত, শ্রীলংকায়। বাংলাদেশে মধুপুর ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জংগলে পাওয়া যায় বলে জানা যায়।
_____________________________
চন্দন :
চন্দন গাছ বড় হয় ধীরগতিতে, আংশিক শেকড় পরজীবী (Root parasite) বলে আশ্রীয় গাছ (Host plant) ছাড়া আরো ধীরে বড় হয়। শ্বেত চন্দনের আশ্রীয় গাছ হিসেবে কালো, কড়াই,নিম, শিমু, সেগুন ইত্যাদি উপযুক্ত বলে প্রতীয়মান হয়। (Hausttoria) এর মাধ্যমে চন্দন গাছের শেকড় আশ্রীয় গাছের শেকড় সংযোগ ঘটায় এবং খাদ্য সংগ্রহ করে। চন্দন গাছ শেকড়ের সাহায্যে মাটি হতে চুন ও পটাশ সংগ্রহ করে কিন্তু নাইট্রোজেন ও ফসফরাসের জন্য আশ্রীয় গাছের শেকড়ের ওপর নির্ভর করে। এ কারণে কোনো পাত্রে বীজ থেকে চারা উত্তোলনের সময় বীজ বপনের আগেই পাত্রে আশ্রীয় গাছের চারা উত্তোলন বাঞ্চনীয়।
ঔষধি গুণ :
রক্তপাত, মাথা ধরা , ঘামাচি ও ব্রঙ্কাইটিস সারাতে মূলত শ্বেত চন্দন ব্যবহৃত হয়। বসন্ত রোগ, বমি বমি ভাব নিরাময়ে, হিক্কা ওঠা বন্ধ করতে, প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ায় কিংবা রক্ত প্রস্রাবেও সুফল পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্রসাধনী ও লোকজ চিকিৎসায় এটি ব্যবহার হয়।
_____________________________
পেনজি :
পেনজি (Pansy
)বৈজ্ঞানিক
নাম
- Viola tricolor hortensis এটি
Violaceae পরিবারের
একটি
উদ্ভিদ। অন্যান্য নামের মধ্যে Viola, Pansy, Pansy
Violet এই
নাম
গুলি
উল্লেখযোগ্য। অন্যান্য প্রজাতিরঃ Viola x wittrockiana ফুলগুলি বিভিন্ন রং এর পাওয়া যায়।
Pansy একটি
বগানের
ফুল
হিসেবে
চাষ
করা
হয়। টবে,বাগানে সব জায়গায় এটা চাষ করা যায়।
নাম
pansy ফরাসি
শব্দ
pensée থেকে
এসেছে
যার
অর্থ
remembrance ।
গাছটি
কেবল
ছয়
থেকে
দশ
ইঞ্চি
উচ্চ
হয়
এবং
দশ
থেকে
বারো
ইঞ্চি
পর্যন্ত
প্রসারিত
হতে
পারে। তারা সূর্যালোক
পড়ে
এমন
অথবা
semi-shade তে ভাল বৃদ্ধি হয় এবং ঠান্ডা আবহাওয়া সহ্য করতে পারে।
______________________________
বোতাম ফুল :
বাংলায় নাম - বোতাম ফুল, বৈজ্ঞানিক নাম Gomphrena
globosa এটি
Amaranthaceae (amaranth family) অন্তর্গত একটি উদ্ভিদ। অন্যান্য নামের মধ্যে
- bachelor's buttons, globe amaranth, gomphrena উল্লেখযোগ্য।
_____________________স্বর্ণচামেলী :
ফুলটার বাংলা নাম স্বর্ণচামেলী অন্যান্য নামের মধ্যে - Yellow Jasmine, Italian Jasmine উল্লেখযোগ্য। বৈজ্ঞানিক নাম- Jasminum humile এটি Oleaceae (Jasmine family) পরিবারের একটি উদ্ভিদ।
এটি একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। উচ্চতায় ১ মিটার বা তার কিছু বেশী হতে পারে। এপ্রিল থেকে জুন এইসময় ফুল ফোটে। ফুল পাঁচ পাপড়ি বিশিষ্ট হয়। এটির ভেজষ গুনাগুনও আছে।
________________________________
ফুল পরিচিতি: ---> পর্ব -১, ---> পর্ব -২
ফুলে ফুলে ভরে যাক গ্রাম বাঙলা
উত্তরমুছুন♥♥♥♥
উত্তরমুছুনকোন দেশে এক ফুলের কত প্রকার চারা পাওয়া যায় বলবেন প্লিজ?
উত্তরমুছুনফুল, জীবনের সেরা সৌন্দর্য আর অকৃত্রিম মনোহরের প্রতীক
উত্তরমুছুনGreat post! I am actually getting ready to across this information, is very helpful my friend. . ফুলের ছবি ডাউনলোড করুন ২০২২ সালের সেরা ....
উত্তরমুছুনফুলের মত সুন্দর হউক আমাদের সবার জীবন
উত্তরমুছুন